স্বাধীনতা পঁচাত্তর

ডাঃ শঙ্করকুমার নাথ
জজ কোর্টে উল্লাসকর দত্তর কন্ঠে —
রবীন্দ্রনাথের “সার্থক জনম আমার;
জন্মেছি এই দেশে” —
তোমার কন্ঠ ছাপিয়ে আজও
লক্ষ কন্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে সে গান।
বুড়িবালামের তীরে যাঁরা লড়লো, মরলো
ওরা আমার আত্মজ,
মোর ক্ষুদিরাম জানিয়েছিল,
সঠিক তোমার পথ খোঁজো।
স্বাধীন নিশানা — ঠিক ছিল দিশা
পাইনি তোমায় যতদিন,
পেয়েই তোমায় কেন হল বল
দেশবাসী এত দিশাহীন।।
কি দুঃসহ যন্ত্রণা পেয়ে
কাজী নজরুল লিখেছিল —
“আসে নাই ফিরে ভারত –ভারতী
মা’র কতদিন দ্বীপান্তর? “
কোথায় সুভাষ,কোথায় যতীন
বিনয় বাদল দীনেশ,
ভগৎ সিং –এরা এখনও কি কাঁদে
দেখে হিংসা ও দ্বেষ?
মাতঙ্গিনী, প্রীতিলতা — বলি
শুনছো আমার কথা?
অর্ধেক শিশু আধপেটা খায়
তবু মোর স্বাধীনতা।।
সুকান্ত — তুমি তো আজও লিখে চলো —
” কারা যেন আজ দু’হাতে খুলেছে
ভেঙেছে খিল
মিছিলে আমরা নিমগ্ন তাই
দোলে মিছিল “।
মাষ্টারদা — তুমি তো দেখনি
পঁচাত্তর বলে কাকে —
তোমার হাড় মাস দিয়ে গড়া স্বাধীনতা
এখন — কুলুঙ্গিটার তাকে।।
পৃথিবীর সব দেশের স্বাধীনতা– অর্জনে
লুকিয়ে আছে সেই সত্যে,
যেখানে শামসুর লেখে —
” তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,
অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিলো
পিতামাতার লাশের উপর। ”
তুমি তো তুলেছ স্বাধীনতা পেতে,
আমিও তুলেছি স্বাধীনতা পেয়ে
সেই একই ত্রিবর্ণ পতাকা
সেই তো আমার গর্ব, হে স্বাধীনতা
পঁচাত্তর বছরে।।
এই স্বাধীনতা আমার তোর
সেই স্বাধীনতা পঁচাত্তর।
এই স্বাধীনতা নিঙড়ে নিতে
পঁচাত্তরের শপথ আমার
পুরো স্বাধীনতা চাইবোই আমি
পুরোটাই আমি চাই।।