বাহন
সুজয় বাগচী
শীতলার বাহন গাধা,
মনটা বড়ই সাদা ।।
গায়ে মেখে কাদা,
গান ধরে পাধা।।
বিশ্বকর্মার হাতি,
মস্ত বুকের ছাতি ।।
বলে ঐরাবতের নাতি,
করে সবাই মাতামাতি।।
পেঁচা কয় প্যাঁচানি,
থামা তোর চেঁচানি।।
জানি লক্ষ্মীর বাহন,
থামা তোর সাতকাহন।।
রামচন্দ্রের বাঁদর,
জড়িয়ে গায়ে চাদর।।
ছড়িয়ে যায় আতর,
সীতা করে আদর।।
সরস্বতী মনসার হাঁস,
হাসিখুশি বারো মাস।।
জগত সংসার নিয়ে,
ব্রহ্মা করে হাঁসফাঁস।।
অসুর সাজে মোষ,
গলা সাধে রোজ।।
দুর্গা ত্রিশূল হাতে,
রাখে তার খোঁজ।।
সিংহ ভীষণ দুষ্টু,
সবাই ডাকে মামা।
গড়িহার থেকে উমা,
কিনেছে নতুন জামা।।
কালীর সাথী শেয়াল,
ভালোই গায় খেয়াল।।
টপকাতে গিয়ে দেয়াল,
পা ভেঙে বেহাল ।।
চিৎকার করে বিড়াল,
আমি বাঘের মাসি।।
ষষ্ঠীঠাকুর হেসে কয়,
হও কাশী বাশি।।
গায়ে ডোরাকাটা দাগ,
হুংকার দেয় বাঘ ।।
বলে দক্ষিণরায়ের চেলা,
আমায় করোনা হেলাফেলা।
সবুজ পালক মোড়া,
ঠোঁট দুখানি লাল।।
কামদেবের টিয়ার,
অহংকারী চাল।।
আকাশ কালো হলে,
নাচে পেখম তুলে।।
সবাইরে করে তুচ্ছ,
রঙিন তার পেখমপুচ্ছ।।
পশু পাখি সবের বাহন,
নারদ মুনির ঢেঁকি ।।
স্বর্গেও ধান ভানেসে,
সংসারে দেয় উঁকি ।।
দশাবতারের সমষ্টি তিনি,
তিনিই পালনকর্তা ।।
গড়ুর তার বাহন
বিষ্ণুর পুরুষোত্তম সত্তা।।
গনেশভায়া চিন্তায় মরে,
গলায় ভয়ের সুর।।
বাঘছাল দাঁতে কেটেছে,
হতচ্ছাড়া পাজি ইঁদুর।।
পাগলে কী না বলে,
ছাগলে সবই খায়।।
অগ্নিদেবের বাহন তিনি,
শাকসব্জি কাঁচা চায়।।
প্রতিদিন সকাল সকাল,
কোঁকর কোঁকর ডাকে।।
ব্যস্ত থেকেও বনবিবি,
মোরগের খবর রাখে।।
লোখিন্দরে ফুলশয্যায় কাটে,
মনসার বাহন সর্প ।।
স্বর্গে প্রতিষ্ঠা পায়,
কমিয়ে চাঁদের দর্প।।
যক্ষ কুবেরের বাহন
সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী মানুষ।।
মেরুদণ্ড খুঁজে বেড়ায়,
হাত পেতে নেয় ঘুষ।।
শ্রদ্ধাশীল প্রভুর প্রতি,
ভৈরব মানুষের গতি।।
কুকুরের নাই জুড়ি,
সদাই প্রভুর প্রহরী।।