August 21, 2025

মসির ধারায় অসির ধার (৩০)

সঞ্জীব মুখার্জী 

“If a man says that he is not afraid of dying, that means he is either lying or he is a Gurkha. There is no third probability.”

 – Field Marshal Sam Manekshaw

 

দেখতে দেখতে সিকিমের ভারত-চীন সীমান্তে কর্মরত আমাদের ব্যাটালিয়নের প্রায় এক বছর কেটে গেলো।  ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৫ সালে প্রবেশ করলাম। এই পুরো বছরটাতে একদিকে যেমন সীমান্ত প্রহরী হিসাবে কাজ করছিলাম অন্যদিকে তেমনি সমান্তরালে আর একটা কাজ আমাদের করতে হচ্ছিলো আর সেটা হলো সিকিমের চরম শীতল আবহাওয়ার বিরুদ্ধে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য যুদ্ধ করা।  বছরজুড়ে সেই যুদ্ধের পর অবশেষে সেখানকার আবহাওয়াকে আমাদের অদম্য জেদ আর অপরাজেয় সাহসের সামনে মাথা নোয়াতে হলো, বশ্যতা স্বীকার করতে হলো আমাদের কাছে সিকিমের মাইনাস ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা কে। ওই রকমের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আমাদের ব্যাটালিয়ন ততদিনে একটি আটপৌরে জীবনযাত্রায় ফিরেছিল। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সীমান্তবর্তী এলাকায় আমাদের কার্য্য কৌশল, কর্মনিপুণতা এবং কর্তব্যপরায়ণতার মাধ্যমে আমাদের “তৃতীয় ব্যাটালিয়ন দি রাজপুতানা রাইফেলস” শুধু ব্রিগেড, ডিভিশন অথবা কোর হেডকোয়ার্টারের কাছেই নয় এমনকি আর্মি হেডকোয়ার্টারের কাছেও প্রমান করে দিয়েছিলো যে সত্যি আমাদের ব্যাটালিয়ন একটি ২০০ বৎসরাধিক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং ইংরেজদের শাসনকালে স্থাপিত একটি ঐতিহ্য মন্ডিত ব্যাটালিয়ন। তারই ফলস্বরূপ আমাদের ব্যাটালিয়নের উপর স্থানীয় ফর্মেশন হেডকোয়ার্টারগুলি খুব প্রসন্ন থাকতেন।

হয়তো সেই প্রসন্নতার ফল হিসাবে স্থানীয় হেডকোয়ার্টার গুলি আমাদের ব্যাটালিয়নকে উপহারস্বরূপ কিছু দিতে চেয়েছিলেন। আজ আমি আপনাদের সেই কথাই বলবো। সেই বছরে অর্থাৎ ১৯৯৫ সালের জুন মাসের কোনো একদিনে আমাদের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার কর্নেল ডি এস ধিল্লন নিকটবর্তী ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার থেকে ফিরে এসে আমাদের সকলকে একত্রিত করে আমাদের সকলকে একটি বার্তা দিলেন, আসলে এটি একটি বার্তা হলেও একটি আনন্দ সংবাদের থেকে কোনো অংশে কম ছিল না। কর্নেল ধিল্লন আমাদের বললেন যে ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার থেকে একটি বিষয়ের উপর বিশেষ ভাবে অনুমতি প্রদান করা হয়েছে যে আমাদের ব্যাটালিয়নের মধ্যে যদি কোনো ব্যক্তি তার ফ্যামিলিকে সেখানে আনতে চান এবং ভারত-চীন সীমান্ত সহ সিকিমের অন্যান্য বিশেষ বিশেষ দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরে দেখাতে চান তাহলে তাদের একটি বিশেষ সুযোগ দেওয়া হবে। তবে এই বিশেষ সুযোগের কিছু বিশেষ শর্ত থাকবে। প্রথমতঃ ফ্যামিলি বলতে কেবল নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদেরকেই আনতে পারা যাবে; দ্বিতীয়তঃ সেখানকার আবহাওয়ার কর্কশতার কথা মাথায় রেখে মাত্র দুই মাসের জন্যই সেখানে ফ্যামিলিকে থাকতে দেওয়ার অনুমতি থাকবে আর সেটা হলো জুলাই এবং আগস্ট মাস কেননা সেপ্টেম্বর মাস থেকে সেখানে তুষারপাত শুরু হয়ে যায় ফলতঃ তাপমাত্রাও তার সঙ্গে সঙ্গে মাইনাসে নামতে শুরু করে তাই ফ্যামিলির পক্ষে সেই সময় সেখানে থাকার কথাটা দুঃস্বপ্নেও ভাবা সম্ভব নয়; তৃতীয়তঃ যারা তাদের ফ্যামিলিকে সেখানে এনে সিকিম ঘুরে দেখাতে চান তাঁদের নিজ শহর থেকে সিকিমের ব্যাটালিয়নের লোকেশন পর্যন্ত আসা যাওয়ার খরচ সরকার বহন করবেন; চতুর্থতঃ এই দুইমাস ফ্যামিলির প্রত্যেকটি সদস্যের থাকা এবং খাওয়া দাওয়ার খরচ ও সরকার বহন করবেন; পরবর্তী তথা শেষ শর্তটি হলো ফ্যামিলিদের সিকিমের যে সমস্ত জায়গাগুলি ঘুরে দেখানো হবে সেখানে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে করে দেওয়া হবে।  এখানে রান্না বান্নার জন্য বাড়ি থেকে কোনো হাঁড়ি কড়াই বয়ে নিয়ে আসার কোনো প্রয়োজন নেই, যতদিন ফ্যামিলি এখানে থাকবে ততদিন আমাদের কুক হাউস থেকে তাদেরকে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে।  মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ফলমূল ইত্যাদির কোনোটারই কোনো অভাব থাকবে না। বাড়ি থেকে কেবল শীতবস্ত্র সঙ্গে করে নিয়ে আসতে হবে তাও সেগুলি পাহাড়ি রাস্তায় যাত্রাকালে ব্যবহারের জন্য, সেই সব শীতবস্ত্রে এখানকার ঠান্ডা তো কাটবে না সেজন্য এখানে ব্যবহার যোগ্য স্লীপিং ব্যাগ, কোট, ম্যাট্রেস ইত্যাদি সবকিছু প্রত্যেক ফ্যামিলি মেম্বারদের জন্য বন্দোবস্ত ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকেই করা হবে। এখানে ফ্যামিলিকে ঘুরিয়ে দেখানোর স্থানগুলির মধ্যে যেহেতু  কিছু কিছু স্থান সংবেদনশীল এলাকার মধ্যে পরে তাই তাদের জন্য এইসমস্ত মুখ্য শর্তগুলি ছাড়া আরো কিছু প্রশাসনিক শর্ত ছিল, সেগুলিতে না গিয়ে আমি আপনাদের আসল বিষয়টা বলি।

কর্নেল ধিল্লনের মুখ থেকে সব কথা শোনার পর আমি তো যারপরনাই খুশি। আমি তো কথা গুলো শুনতে শুনতেই একরকম পরিকল্পনা করে ফেললাম যে আমার স্ত্রী জবা’কে কিভাবে দুই মাসের জন্য নিয়ে আসবো, কোথায় কোথায় ঘোরাবো, কি কি দেখাবো, ইত্যাদি ইত্যাদি। জবা তো ঘুরতে খুব ভালোবাসে তাই এহেন সুযোগ কি করে আর হাতছাড়া করা যায়। আর পাহাড়পর্বত, নদীনালা, বনজঙ্গল, ঝর্না জলপ্রপাত, পশুপক্ষী, এইসব প্রাকৃতিক নৈসর্গ কার না ভালো লাগে। তাছাড়া জুলাই আগস্ট মাসের সমতলের প্রচন্ড দাবদাহের কষ্টের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে কে না চায় বলুন তো। তবে কর্নেল ধিল্লনের কথাবার্তা চলাকালীন একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করলাম যে আমি নিজে মনে মনে ভীষণ খুশি হলেও বাকি লোকেদের মধ্যে সেই খুশির ঝলক টা চোখে পড়লো না। কর্নেল ধিল্লন নিজের বক্তৃতা শেষ করে সেখান থেকে চলে গেলেন আর সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গেলো এই বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলাবলি। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে অন্য সকলের খুব একটা খুশি না হওয়ার কারণটি। আসলে আমাদের ব্যাটালিয়নের বেশিরভাগ সৈনিক হলো হরিয়ানা, রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশ থেকে আর এই সমস্ত রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকেদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে আমাদের বাঙালীদের এবং দক্ষিণভারতীয়দের কয়েকজন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্যান্য রাজ্যগুলি সিকিম থেকে অনেক দূরে অবস্থিত তাই তাদের কাছে সেই সমস্ত দূরবর্তী রাজ্যগুলি থেকে তাদের ফ্যামিলিদের মাত্র দুই মাসের জন্য নিয়ে আসার অর্থ হলো তাদেরকে অযৌক্তিক ভাবে ডিসটার্ব করা এবং সেই কারণেই তারা এই সংবাদে খুব একটা খুশি হননি।

এবার শুরু হলো আমার পরিকল্পনার ছক কাটার পালা। পরিকল্পনার ছক কাটতে গিয়ে প্রথম দৃষ্টিতেই একটি জায়গায় একটু থমকে দাঁড়ালাম। জবাকে আনবো তো বটে কিন্তু সঙ্গে আরো দু একটি ফ্যামিলি না থাকলে জবার তো অসুবিধা হয়ে যাবে। কিন্তু আমি ছাড়া বাকি লোকেদের শারীরিক ভাষা দেখে বুঝতে পারলাম যে এদের কেউই মাত্র দুই মাসের জন্যে ফ্যামিলি আনতে চান না। তাই ভাবা শুরু করলাম এদের কাউকে না কাউকে রাজি করাতে হবে তবেই আমি জবাকে নিয়ে এসে সিকিমটা ঘুরে দেখিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু কাকেই বা রাজী করাই আর কেই বা রাজী হবে। ভাবতে ভাবতে দু তিন দিন কেটে গেলো।  হটাৎ খবর কানে আসলো যে একটি বাঙালি ছেলে অন্য কোনো ব্যাটালিয়ন থেকে আমাদের ব্যাটালিয়নে স্থায়ী পোস্টিং নিয়ে এসেছে।  খোঁজ খোঁজ করতে করতে অন্য কারোর মারফৎ খবর দিয়ে পাঠালাম যে নবাগত ছেলেটি যেন পত্রপাঠ আমার সাথে এসে দেখা করে।  খবর পেয়েই ছেলেটি আমার সাথে দেখা করতে আসে। তার সাথে আলাপ করে জানতে পারলাম যে তার নাম আনসার আলি, বাড়ি হচ্ছে সিউড়ী এবং বহরমপুরের মাঝামাঝি কান্দি বলে একটি ছোট্ট শহর আছে সেখানে। আমার মতো সেও নব বিবাহিত। আমি তাকে সবটা বলে সরাসরি তাকে তার স্ত্রী কে দুই মাসের জন্য এখানে আনার প্রস্তাবটা দিলাম আর তাকে এও জানালাম যে সে যদি রাজী হয় তাহলে আমার পক্ষেও জবাকে এখানে নিয়ে আসার মুশকিলটা আসান হয়ে যাবে। আমার কাছে পুরো বিষয়টা শোনার পর প্রথমে একটু কিন্তু কিন্তু করলেও অবশেষে আমার সমস্ত দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে সে রাজী হলো। সেদিনই আমি এবং আনসার দুজনেই আমাদের নিজ নিজ বাড়িতে চিঠি লিখে আমাদের ইচ্ছের কথাটা জানালাম এবং কয়েক দিনের ভিতরেই পত্র মারফৎ আমরা আমাদের বাড়ি থেকে সম্মতি পেলাম। ব্যস, আর আমাদের দেখে কে?

যথারীতি আমরা দুজনেই জুন মাসের শেষ দিকে দশ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি গেলাম। ঠিক করে নিয়েছিলাম আমি এবং আনসার আমাদের স্ত্রীদেরকে নিয়ে সিউড়ি থেকে শিলিগুড়ি আসার স্টেট বাস ধরে একসাথে গল্প করতে করতে আসবো। কার্যতঃ হলোও তাই। আমি, জবা, আনসার এবং আনসারের স্ত্রী আমরা চারজনেই শিলিগুড়ি পৌঁছে গেলাম। সঙ্গে দুটি করে হালকা ব্যাগ। শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পর আমরা ট্রানজিট ক্যাম্পে রিপোর্ট করলাম, সেখান থেকে পরদিন সিকিম ন্যাশনালাইজড ট্রান্সপোর্ট-এর বাসে করে জুলুক পৌঁছলাম। জুলুকের স্টেজিং-কাম-এক্লিমেটাইজেসন ক্যাম্পে বাধ্যতামূলক দিন সাত আটেক কাটালাম। শিলিগুড়ির ট্রানসিট ক্যাম্পে এবং জুলুকের ক্যাম্পে ফ্যামিলির থাকা খাওয়ার পৃথক বন্দোবস্ত আর্মির পক্ষ থেকেই করা ছিল। জুলুকের বিধি সম্পন্ন হয়ে গেলে আমাদের ব্যাটালিয়ন থেকে পাঠানো একটি জীপ গাড়িতে করে সেখান থেকে আমরা কুপুপে ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারের ঠিকানায় পৌঁছলাম।  ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারের লোকেশন সানি ভ্যালিতে আমাদের ফ্যামিলির থাকার জন্য পৃথক পৃথক রুম, রুম গরম করার জন্য সিগড়ি বা বুখারী, টয়লেট বাথরুম, বিছানা পত্র সবকিছু আগে থেকেই রেডি করা ছিল। আর এসব কিছুর বন্দোবস্ত আমাদের ব্যাটালিয়নই করে দিয়েছিলো।

কুপুপে পৌঁছনোর পর দু একদিন বিশ্রাম নিয়ে তারপর আমাদের ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে আমাদের ফ্যামিলির ঘোরার জন্য একটি স্থায়ী জীপ গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। শুরু হয়ে যায় আমাদের চারজনের সিকিম দর্শন। এক এক করে নাথুলা ভারত-চীন আন্তর্জাতিক বর্ডার থেকে আরম্ভ করে ছাঙ্গু লেক, কুপুপ লেক, গ্যাংটক এবং ছোট বড় অনেক স্থান ঘুরিয়ে দেখালাম জবাকে এবং আনসারের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে।  যতই ঘোরে ততই নতুনত্বের সঙ্গে পরিচিতি হয়। তবে এক নাগাড়ে আমরা না ঘুরে বেরিয়ে মাঝে মধ্যে দু একদিনের অন্তরালে আমরা ঘুরতে বেরোতাম। আমাদের সেখানে দিন ১৫ থাকার পর আমাদের দেখাদেখি হরিয়ানা থেকে জন দুয়েক সৈনিক এবং রাজস্থান থেকে জন তিনেক সৈনিক তাদের ফ্যামিলি নিয়ে কুপুপে আসে সিকিম ঘোরানোর জন্য কিন্তু তারা প্রত্যেকেই দুই সপ্তাহের পরই তাদের ফ্যামিলিদের যে যার বাড়িতে রেখে ফিরে আসে। সেখানে ফ্যামিলিদের আমরা যাতে করে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি সেজন্য কর্নেল ধিল্লন আমাকে এবং আনসারকে এই দুই মাস খুব একটা কাজে ব্যস্ত রাখতেন না।  আমাদের কাছে ঘুরে বেড়ানো আর খাওয়া দাওয়া ছাড়া বিশেষ কিছু কাজের ব্যস্ততা ছিল না। যে দিনগুলিতে আমরা ঘুরতে যেতাম না সেদিনগুলি আমরা ব্যাটালিয়নের কাজে লিপ্ত হয়ে যেতাম। আর তাছাড়া আমাদের ব্যাটালিয়নের লোকেশনের সন্নিকটে বাবা হরভজন সিংয়ের মন্দির তো ছিলই এবং সেই মন্দিরের দেখাশোনা আর রক্ষণাবেক্ষণের দায়ীত্ব আমাদের ব্যাটালিয়নের আওতায় ছিল।  তাই জবা এবং আনসারের স্ত্রী দুজনে স্নান টান সেরে নিয়ে জীপ গাড়িতে করে প্রায় বাবার মন্দিরে চলে যেত আর সেখানে বাবার পুজো দিয়ে কিছুক্ষণ কাটিয়ে তারপর আবার স্বস্থানে ফিরে আসতো। দেখতে দেখতে দুই মাস এমনিই কেটে গেলো। ইতিমধ্যে মোটামুটি সব কিছু ঘুরে দেখা দেখাও হয়ে গেছে।

এবার আগস্ট মাসের শেষ দিক করে আমাদের ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের নির্দেশে দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে জবাকে সিউড়িতে আমাদের বাড়িতে রেখে আবার আমি নিরাপদে ফিরে আসলাম কুপুপে। ওদিকে আনসারও ফিরে গেলো তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে রেখে আসতে। ফিরে আসার পর স্বাভাবিক কারণেই মনটা একটু বেশ খারাপ খারাপ লাগছিলো, কিন্তু কিছু করার নেই। এগুলো তো হবেই, হবারই কথা, কিন্তু তার চাইতে যে অনেক বড় দায়ীত্বভার আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে যেটি হলো দেশ রক্ষার দায়ীত্বভার।  অদম্য সাহসিকতার সে দায়ীত্বভার, অপরিসীম গর্বের সে দায়ীত্বভার, সুগভীর বিশ্বাসের সে দায়ীত্বভার। সে দায়ীত্বভারের তুলনায় জীবনের অন্য সব কিছু তৃণ, দীন এবং তুচ্ছ। দিন কয়েকের মধ্যেই এই সমস্ত পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে আবার নিজের জীবনের এবং কর্মের ছন্দে ফিরলাম। চলতে লাগলো আবার আমাদের ব্যাটালিয়নের দৈনন্দিন জীবন যাত্রা ভারত-চীন সীমান্তে। এই জীবন যাত্রারই বিশেষ কিছু অংশ নিয়ে আবার ফিরবো আপনাদের কাছে, তুলে ধরবো কিছু আকর্ষণীয় ঘটনার কথা আপনাদের সামনে।  ততদিন ভালো থাকবেন, সুরক্ষিত থাকবেন, আর অবশ্যই পড়তে থাকবেন “জেলার খবর সমীক্ষা”। জয় হিন্দ।

 

ক্রমশঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *